গামা ফাংশন কি?



গামা ফাংশন হলো কাল্পনিক সংখ্যা এবং বাস্তব সংখ্যার ফ্যাক্টোরিয়ালের জেনারালাইজেশন।

মানে সোজা বাংলায় আমরা শুধু ধণাত্মক পূর্ণ সংখ্যার ফ্যাক্টোরিয়াল সাধারণ নিয়মে নির্ণয় করতে পারি যেমনঃ 5!, 13! ইত্যাদি।কিন্তু আমরা -5!, 1/6!, e!, 7i  কিভাবে বের করব বা আদৌও কি এসবের ফ্যাক্টোরিয়াল বের করা সম্ভব?! হ্যাঁ সম্ভব। কিভাবে সম্ভব এর উত্তর খুঁজতে গিয়েই গণিতবিদরা গামা ফাংশন তৈরী করেন  যা “ Γ ” চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 

আর এই কাজটি করেন ১৭২০ সালে বিখ্যাত গণিতবিদ লিওনার্ড অয়লার।তিনিই প্রথম অপূর্ণ সংখ্যার   ফ্যাক্টোরিয়ালকে বিস্তৃত করার কাজ শুরু করেন।পরবর্তীতে এই ফাংশন গণিতের জগতে সবচেয়ে   গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠে।

 

গামা ফাংশন আলোচনার আগে আমরা একটু ফ্যাক্টোরিয়াল কি এবং  কিভাবে কাজ করে তাতে একটু চোখ বুলাই।ফ্যাক্টোরিয়াল হলো একটি সংখ্যার  ঐ সংখ্যাসহ নিচের সংখ্যাগুলোর গুণফল। আর আমরা ফ্যাক্টোরিয়াল ব্যবহার করি কোন একটা সংখ্যাকে যতভাবে সাজানো যায় সেটার পদ্ধতির সংখ্যা হিসাব করতে।অর্থাৎ ধরুন আপনি ১২টি বই একটি বুক শেলফে সাজিয়ে  রাখবেন।আপনি কিন্তু ৪৭৯ মিলিয়ন পদ্ধতিতে এই ১২টি বই সাজিয়ে রাখতে পারবেন আপনার বুক শেলফে।

তাহলে আমরা  5 এর ফ্যাক্টোরিয়ালকে এভাবে লিখতে পারিঃ

5*4*3*2*1=120=5!

ঠিক একইভাবে n সংখ্যার ফ্যাক্টোরিয়ালকে এভাবে লিখতে পারিঃ

n!= n.(n-1).(n-2)…….3.2.1

কিন্তু এই পদ্ধতি ঋণাত্মক সংখ্যা(-9, -5, -17),ভগ্নাংশ সংখ্যা(1/4, 1/2),বাস্তব সংখ্যা(1/3, pi, e),কাল্পনিক সংখ্যা(6i, 13i) এসব ক্ষেত্রে খাটে না। তখন আমরা গামা ফাংশন ব্যাবহার করি।

 

১৭৩৮ সালে অয়লার ফ্যাক্টোরিয়ালকে একটি ফাংশনে রূপান্তর করেন নির্দিষ্ট অন্তরজের দ্বারা।যেটা ছিল এমনঃ


এখানে n হলো স্বাভাবিক সংখ্যা এবং log হলো স্বাভাবিকলগারিদম।পরবর্তীতে  S = e-t  বসিয়ে এমনটা পাই।


এখন এই সমীকরণটা আমাদের কাছে পরিচিত লাগছে! মজার ব্যপার হলো এই ফাংশনকে n! এর সমান হিসেবেও লিখা যায়।


এটি অয়লার সমীকরণের সমতুল্য। এখানেও n হলো স্বাভাবিক সংখ্যা।কিন্তু এই ফাংশন n! এর সমান হলো কি করে? এটা প্রমানের জন্য চলুন আমরা ডানপক্ষে একটি ফাংশন П(n)  নিই।এরপর ক্যালকুলেশন করে আমরা একটা ভ্যালু পাইঃ


এখন আমাদের প্রমান করতে হবে П(n) = n!  যা সকল স্বাভাবিক  সংখ্যার জন্য সত্য হবে। কিন্তু আমরাতো П(n) এর মান জানি না! চলুন এটাও বের করে নিই।


আমরা পেলাম П(n) = 1 = 1!  (এভাবে লিখলে সমস্যা নেই)।ঠিক এভাবেই আমরা ধরে নিতে পারি П(n-1) = (n-1)!  তাহলে আমরা পেলামঃ

П(n) = nП(n-1) = n(n-1)! = n!

[এখানে П(n) এর n সবসময় স্বাভাবিক সংখ্যা হওয়ার প্রয়োজন নেই]


এই সমীকরণকে  জটিল সংখ্যার ধণাত্মক অংশ দিয়েও সংজ্ঞায়িত করা যায়।কিন্তু এই একই কাজ আমরা গামা ফাংশন দিয়ে করি।গামা ফাংশন আর  П প্রায় একই ।তাই আমরা গামা ফাংশনকে П এর মতো লিখা যায়।যেমন  সমীকরণ থেকে  এমন একটা ফাংশন পাবো:


এখানে  Γ(z) = Γ(n) = П(n-1) = (n-1)!  যা সকল স্বাভাবিক সংখ্যার জন্য সত্য।

সবশেষে  গামা ফাংশন Γ(z+1) = zΓ(z) = z!  কেউ  সংজ্ঞায়িত করবে যেখানে  z  হলো সকল বাস্তব অঋণাত্মক সংখ্যা।



এখন আরেকটা প্রশ্ন হলো গামা ফাংশন আমরা কোথায় ব্যবহার করি।গামা ফাংশন থেকে আমরা গামা ডিস্ট্রিবিউশন নির্ণয় করতে পারি যেটা ভূমিকম্পের ব্যবধানের মডেল তৈরীতে ব্যবহৃত হয়, চি-স্কয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সংজ্ঞায়িত করতে পারি ,বার বার পরিবর্তিত কোন কিছুর মডেলিং করতে গামা ফাংশন ব্যবহার করা যায়।

 

 

 

 


Cosmophysics-Bangladesh

Hi,i am an astronomy enthusiast and a student of Astrophysics.In this site,you can find articles about Physics,Astronomy,Astrophysics and Cosmology in bangla.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন