মানবজাতির একটা সপ্ন ছিলোই যে তারা মহাকাশ পাড়ি দিবে।এমনকি সেই সপ্ন সত্যিও হয়েছিল।সেই সপ্ন ডানা মেলেছিল ঐ দূর মহাশুণ্যের পাড়ে।আন্দাজ করতে পারছেন,সেই সপ্নটা কি ছিল?
হ্যাঁ, সেই সপ্নটাই
ছিল ভয়েজার-১।এটিই মানব নির্মিত প্রথম কোন মহাকাশযান ছিল যেটা আমাদের সৌরজগতের সীমানা নামে পরিচিত হেলিওপজ ছাড়িয়ে গিয়েছিল এবং এখনও
প্রতি মুহূর্তে পাড়ি দিচ্ছে আরোও অজানার দিকে।কিন্তু আমরা কি এই যানের কথা ভুলে গেছি!
ভয়েজার-১।এটিই মানব নির্মিত প্রথম কোন মহাকাশযান ছিল যেটা আমাদের সৌরজগত ছাড়িয়ে গেছে,প্রথম ইন্টারস্টেলার স্পেস এ প্রবেশ করেছে,প্রথমবার বৃহস্পতির চিকন একটি বলয় ও ২টি জোভিয়ান চাঁদ(Thebe,Metis) আবিষ্কার করেছে,শনির জি বলয়(G-ring) ও ৫টি চাঁদ আবিষ্কার করেছে।তবুও কি এত বছর পর অনান্য মহাকাশযানের ভিড়ে এর অবদান ফিঁকে হয়ে গেছে?আমার মতে মোটেও না।অবশ্য ভয়েজারের বয়সও কম নয়।৪৩ বছর হতে চলেছে এই সেপ্টেম্বরেই।
চলুন ফিরে যাই ১৯৭৭
সালের ৫ সেপ্টেম্বরের সেই সময় যখন একটু পরেই নাসার কেপকেনাভেরালের কমপ্লেক্স-৪১
থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ভয়েজার-১ কে।তখন আমি আপনার মতো হাজারো
কৌতূহলীরা হয়তবা কখনোই কল্পনা করেনি যে এটিই একদিন ইতিহাস সৃষ্টি করবে।মহাকাশের
নতুন দিগন্তকে উন্মোচন করবে। সৌরজগত পড়ি দিবে।বহন করবে পৃথিবীবাসীর সাক্ষর।হয়তোবা কোন একদিন কোন
ভিনগ্রহীরা খুঁজে পাবে আর ভয়েজার-১ গর্বভরে বলবে “আমি পৃথিবী থেকে এসেছি,আমি সেই
ফ্যাকাসে নীল বিন্দুটি থেকে এসেছি!”
একটা মজার ব্যাপার
হল এই ক্ষুদ্রযানটি প্রতি ঘণ্টায় ৩৮০২৬মাইল বেগে ছুটে ২০১২ সালের ১২ই আগস্ট
ইন্টারস্টেলার স্পেসে প্রবেশ করেছে যা মানব নির্মিত প্রথম কোন যান ছিল।এখন পর্যন্ত এটি পড়ি দিয়েছে ১৪৯.২১ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট(A.U)।আলোর গতিতে হিসেব করলে
যা হয় ২০ ঘণ্টা ৪০ মিনিট প্রায়।
বর্তমানে যানের
১০টি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের মদ্ধে ৬টিই অকেজো হয়ে গেছে।ভয়েজার টিমের মতে ২০২৫ এর
মদ্ধেই এর পাওয়ার সাপ্লাই শেষ হয়ে যাবে।তখন আর ভয়েজার নতুন কোন সিগন্যাল গ্রহণ বা
পাঠাতে পারবে না।অবশ্য আশার একটি কথা হলো ২০২৫ এর পরেও এটি ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ডিপ
স্পেস নেটওয়ার্কের পরিসরে থাকবে।অর্থাৎ এর প্রেরিত সর্বশেষ ডাটাগুলো উদ্ধার করা যেতে পারে অথবা
এর মধ্যে যানটি যদি কোন উৎস থেকে পাওয়ার সাপ্লাই নিতে পারে তাহলে আবার সিগন্যাল
পাঠাতে পারবে।
[পরবর্তী পর্বে
ভয়েজার-১ এর সকল আবিষ্কার এবং এর কার্যাবলী সম্পর্কে জানতে পারবেন]